পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি বাড়ছে।রপ্তানি আয়ে বড় ধাক্কার কারণে এই ঘাটতি বাড়ছে বলে মনে করছেন অর্থনীতির গবেষক আহসান এইচ মনসুর।
বাংলাদেশ ব্যাংক মঙ্গলবার বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের (ব্যালান্স অফ পেমেন্ট) হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৬২ কোটি ডলার। গত বছরের একই সময়ে ঘাটতি ছিল এর চেয়ে কম; ৫৩২ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
অর্থবছরের তিন মাস পর্যন্ত পণ্য বাণিজ্যে ঘাটতি আগের বছরের চেয়ে কম ছিল।গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এই ঘাটতি ছিল ৩৮৫ কোটি ২০ লাখ ডলার।এই বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে ছিল তার থেকে কম ৩৭১ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে (এফওবিভিত্তিক, ইপিজেডসহ) মোট এক হাজার ৮১৩ কোটি ৭০ লাখ (১৮.১৩ বিলিয়ন) ডলার ব্যয় করেছে বাংলাদেশ। আর পণ্য রপ্তানি থেকে (এফওবিভিত্তিক, ইপিজেডসহ) আয় করেছে এক হাজার ২৫১ কোটি ৭০ লাখ (১২.৫২ বিলিয়ন) ডলার।
এ হিসাবেই বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৬২ কোটি (৫.৬২ বিলিয়ন) ডলার।
তথ্যে দেখা যায়, এই চার মাসে আমদানি ব্যয় কমেছে ৩ দশমিক ১৭ শতাংশ। আর রপ্তানি আয় কমেছে ৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের পুরো সময়ে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল এক হাজার ৫৪৯ কোটি ৪০ লাখ (১৫.৪৯ বিলিয়ন) ডলার।২০১৭-১৮ অর্থবছরে এই ঘাটতি ছিল আরও বেশি ১৮ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য ঘেটে দেখা যায়, বিগত বছরগুলোতে দেখা গেছে, আমদানি খাতে ব্যয় বাড়ার কারণে রপ্তানি আয় বাড়লেও বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে বাংলাদেশের। কিন্তু এবার আমদানি ব্যয় কমার পরও রপ্তানি আয় কমায় বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ছে।
সেবা খাতের ঘাটতি ১.১৫ বিলিয়ন ডলার
তবে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি কিছুটা কমেছে। জুলাই-অক্টোবর সময়ে এ খাতের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১১৫ কোটি ১০ লাখ (১.১৫ বিলিয়ন) ডলার। গত বছরের একই সময়ে ঘাটতি ছিল এর চেয়ে একটু বেশি; ১২৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
মূলত বিমা, ভ্রমণ ইত্যাদি খাতের আয়-ব্যয় হিসাব করে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি পরিমাপ করা হয়।
লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি ১.৩ বিলিয়ন ডলার
জুলাই-অক্টোবর সময়ে বাংলাদেশের বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যালান্স অফ পেমেন্ট) ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩০ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
গত বছরের একই সময়ে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২০৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) এই ঘাটতি ছিল ৬৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
অথচ অগাস্ট মাস শেষেও অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক ২৬ কোটি ৮০ লাখ ডলার উদ্বৃত্ত ছিল।