সাগর নন্দিনীতে এখনও ৪ লাখ লিটার তেল, মামলাও হয়নি

0
36

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত তেলবাহী ট্যাংকার সাগর নন্দিনী-২ ডুবতে বসলেও এখনও নৌযানটি থেকে সম্পূর্ণ জ্বালানি তেল অপসারণ করা হয়নি। বিস্ফোরণের পর ছয় দিন হয়ে গেলেও ক্ষতিগ্রস্ত নৌযানটিতে ৪ লাখ লিটার পেট্রোল রয়ে গেছে, যেটি অপসারণে ঝুঁকির কথা বলছে ফায়ার সার্ভিস।  পরপর দুই দফা বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ট্যাংকারটির বিভিন্ন স্থানে ছিদ্র হয়ে পানি উঠছে। এ অবস্থায় বুধবার বিকাল থেকে দুটি বাল্কহেড বসিয়ে পাম্পমেশিনের সাহয্যে সেখান থেকে পানি সরানো হচ্ছে। তেল পুরোপুরি সরানোর আগেই ট্যাংকারটি ডুবে গেলে সেগুলো নদীতে মিশে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক মো. ফিরোজ কুতুবী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ট্যাঙ্কারে থাকা অবশিষ্ট তেল অপসারণে ঝুঁকি রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের পরীক্ষা নিরীক্ষা ও নির্দেশনা ছাড়া তা এখনই অপসারণ করা সম্ভব হচ্ছে না।”

তবে পানি উঠে ট্যাঙ্কার যাতে ডুবে যেতে না পারে সেজন্য, তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।২৯ জুন ঈদের দিন পদ্মা ওয়েল কোম্পানির জন্য ১১ লাখ লিটার জ্বালানি তেল নিয়ে সাগর নন্দিনী-২ ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর পাড়ে আসে। রাজাপুর গ্রামের কাছে সেটি নোঙ্গর করা ছিল। কিন্তু ১ জুলাই ট্যাংকারটিতে হঠাৎ বিস্ফোরণে আগুন ধরে যায়। ওই ঘটনায় পর্যায়ক্রমে চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয়রা সেসময় জানান, জাহাজটি নদীর দক্ষিণ পাড় বরাবর নোঙ্গর করা ছিল। হঠাৎ বিকট শব্দে সবাই ভয় পেয়ে যান। পেছনের দিকে ইঞ্জিন রুমে বিস্ফোরণে পর জাহাজের ওপরের অংশ ছিটকে পড়ে যায়। তখন আগুন জ্বলছিল ও ধোঁয়া উড়ছিল। জাহাজটিতে কোথাও কোথাও ফাটলের চিহ্নও দেখেছেন তারা। ট্যাংকারটির আশপাশে কিছু তেলও ভাসতে দেখেন স্থানীয় সংবাদকর্মীরা। ওই বিস্ফোরণের দুদিনের মাথায় সোমবার ফের ওই ট্যাংকারে বিস্ফোরণে আগুন ধরে গেলে পুলিশসহ ১৫ জন দগ্ধ হন। ফায়ার সার্ভিস সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

প্রথম বিস্ফোরণের পরই জাহাজটি থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে ছোট ছোট কার্গো ট্যাংকারে করে তেল সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) আসিফ মালিক। তবে দ্বিতীয় দফা বিস্ফোরণের পর সেই কাজ থমকে যায়।পদ্মা অয়েল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাসুদুর রহমান বৃহস্পতিবার সংবাদিকদের বলেন, জাহাজটিতে মোট ৬ লাখ ৬ হাজার ৮৫৪ লিটার ডিজেল ছিল। পেট্রোল ছিল ৪ লাখ ৫ হাজার ৫৬২ লিটার।

দুর্ঘটনার পর ডিপোতে খালাস করা হয় ৪ লাখ ২৩ হাজার ২২৮ লিটার ডিজেল। আরও ২ লাখ লিটার ডিজেল পদ্মা ওয়েল কোম্পানির সাগর নন্দিনী-৪ ট্যাংকারে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে ৪ লাখ লিটারেরও বেশি পেট্রোলের মধ্যে মাত্র ২ হাজার লিটার পেট্রোল অপসারণের কথা জানিয়ে মাসুদুর রহমান বলেন, “বাকি পেট্রোল ওই ট্যাংকারেই রয়ে গেছে। সেগুলো তদন্ত কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে দু-একদিনের মধ্যে অপসারণ করা হবে।”

বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে পদ্মা ওয়েল কোম্পানির ব্যবস্থাপককে (অপারেশন) প্রধান করে চার সদস্যবিশিষ্ট কমিটিও গঠন করা হয়েছে। বিস্ফোরণের পরই ওই কমিটির কাজ শুরুর কথা জানিয়েছিলেন মাসুদুর রহমান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here