নীতিমালা প্রকাশ- র‍্যাগিং ও বুলিং প্রমাণিত হলে ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা

0
49

পিভিউ অনলাইন ডেস্ক : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোনো শিক্ষক বা শিক্ষার্থী বুলিং ও র‍্যাগিংয়ে জড়ালে শাস্তির বিধান রেখে নীতিমালা জারি করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে নীতিমালা জারি করেছে। গতকাল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এ নীতিমালা ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং ও র‍্যাগিং প্রতিরোধসংক্রান্ত নীতিমালা-২০২৩’ নামে অভিহিত হবে। এ নীতিমালা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য হবে।

শিক্ষার্থীরা যেন নিরাপদ পরিবেশে নির্ভয়ে লেখাপড়া করতে পারে, সেটা নিশ্চিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বুলিং ও র‍্যাগিং বন্ধে এই নীতিমালা প্রকাশ করা হয়।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষক, কর্মচারী, শিক্ষার্থী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে র্যাগিং ও বুলিংয়ে জড়িত থাকলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাদের শাস্তি হবে। প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির সভাপতি বা সদস্যরা র‍্যাগিংয়ে জড়ালে তাদের বিরুদ্ধেও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ফৌজদারি আইনে র‍্যাগিংয়ে জড়িত শিক্ষক, শিক্ষার্থী বা সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

নীতিমালায় হয়েছে, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তিন থেকে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট বুলিং ও র্যাগিং প্রতিরোধ কমিটি করতে হবে। বুলিং ও র‍্যাগিং প্রতিরোধে কর্তৃপক্ষ ও কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানের করণীয় সম্পর্কে নীতিমালায় বলা হয়েছে, বুলিং ও র‍্যাগিংয়ে উত্সাহিত হয় এরূপ কোনো কার্যকলাপ, সমাবেশ বা অনুষ্ঠান করা যাবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যেসব জায়গায় বুলিং ও র‍্যাগিং হওয়ার আশঙ্কা থাকে, সেসব জায়গায় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে নজরদারির ব্যবস্থা করবে।

নীতিমালায় মৌখিক, শারীরিক, সামাজিক, সাইবার ও সেক্সুয়াল—এই পাঁচ ধরনের বুলিং ও র‍্যাগিংয়ের কথা বলা হয়েছে। কাউকে উদ্দেশ্য করে মানহানিকর/অপমানজনক এমন কিছু বলা বা লেখা, যা খারাপ কোনো কিছুর প্রতি ইঙ্গিত বহন করে ইত্যাদিকে মৌখিক বুলিং ও র‍্যাগিং বোঝাবে। যেমন—উপহাস করা, খারাপ নামে সম্বোধন করা বা ডাকা, অশালীন শব্দ ব্যবহার করা, গালিগালাজ করা, শিস দেওয়া, হুমকি দেওয়া, শারীরিক অসমর্থকে নিয়ে উপহাস করা বা অনুরূপ কার্যাদি।

শারীরিক বুলিং ও র‍্যাগিংয়ের বিষয়ে নীতিমালায় বলা হয়েছে, কাউকে কোনো কিছু দিয়ে আঘাত করা, চড়-থাপ্পড়, শরীরে পানি বা রং ঢেলে দেওয়া, লাথি মারা, ধাক্কা মারা, খোঁচা দেওয়া, থুতু ছোড়া, বেঁধে রাখা, কোনো বিশেষ ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে বসে বা বিশেষ অবস্থায় থাকতে নির্দেশ দেওয়া অথবা কোনো কিছু করতে বা না করতে বাধ্য করা, কারো কোনো জিনিসপত্র জোর করে নিয়ে যাওয়া বা ভেঙে ফেলা, মুখ বা হাত দিয়ে অশালীন বা অসৌজন্যমূলক অঙ্গভঙ্গি করা বা অনুরূপ কার্যাদি।

সামাজিক বুলিং ও র‍্যাগিংয়ের বিষয়ে বলা হয়েছে, কারো সম্পর্কে গুজব ছড়ানো, প্রকাশ্যে কাউকে অপমান করা, ধর্ম, বর্ণ, জাতি, গোত্র, পেশা, গায়ের রং, অঞ্চল বা জাত তুলে কোনো কথা বলা বা অনুরূপ কার্যাদি।

সাইবার বুলিং ও র‍্যাগিংয়ের বিষয় বলা হয়েছে, কারো সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কটু কিছু লেখা বা ছবি বা অশালীন ব্যঙ্গাত্মক কিছু পোস্ট করে তাকে অপদস্থ করা বা অনুরূপ কার্যাদি।

সেক্সুয়াল বুলিং ও র‍্যাগিংয়ের বিষয়ে বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আপত্তিজনক স্পর্শ করা বা করার চেষ্টা করা, ইঙ্গিতবাহী চিহ্ন প্রদর্শন করা, আঁচড় দেওয়া, জামাকাপড় খুলে নেওয়া বা খুলতে বাধ্য করা বা অনুরূপ কার্যাদি। এছাড়া এমন কর্ম, আচরণ, কার্যাদি, যা অসম্মানজনক, অপমানজনক ও মানহানিকর এবং শারীরিক/মানসিক যাতনার কারণ হতে পারে, তা যে নামেই হোক না কেন, তা বুলিং ও র‍্যাগিং হিসেবে গণ্য হবে বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here