ভূমধ্য সাগর পাড়ি দিয়ে অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার পথে নৌকাডুবে অন্তত ৬৫ জন মারা গেছেন, তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি রয়েছেন।
শুক্রবার তিউনিসিয়া উপকূলে ওই নৌকাডুবির পর জীবিত ডজন খানেক মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে বিলাল আহমেদ নাম এক বাংলাদেশি ইউরোনিউজকে বলেছেন তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা।
বেলাল বলেন, “একজন একজন করে তারা ডুবে যেতে লাগল, হারিয়ে গেল সাগরের নিচে।”
৩০ বছর বয়সী কৃষক বেলাল এই নৌকাডুবিতে দুই স্বজনকে হারিয়েছেন বলে জানান।
ভূমধ্য সাগরে এই নৌকাডুবিতে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার চার যুবক মারা গেছেন এবং আরও দুজন নিখোঁজ বলে এলাকায় তাদের স্বজনদের কাছে খবর এসেছে।
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মহিদপুর গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে লিটন আহমদ (২৪), মনতু মিয়ার ছেলে আহমদ মিয়া (২৫), একই গ্রামের হারুন মিয়ার ছেলে আব্দুল আজিজ (২৪), মানিককুনা গ্রামের আফজাল মাহমুদের মারা যাওয়ার খবর এসেছে।
আজিজের ভাই মফিজুর রহমান বলেন, তার চাচা মুয়িদপুর গ্রামের দিলাল আহমদ ফোনে জানিয়েছেন নৌকাডুবিতে ফেঞ্চুগঞ্জের চারজন মারা গেছেন। আহসান হাবিব শামিম ও কামরান আহমেদ মারুফ নামের আরও দুই যুবক নিখোঁজ।
আহসান হাবিব সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদের ভাই। আর কামরান আহমেদ মারুফ তার শ্যালক।
মারুফ সিলেটের গোলাপগঞ্জের শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের কুদুপুর গ্রামের ইয়াকুব আলীর ছোট ছেলে। আহসান হাবিব শামীমের বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায়।
মারুফের সঙ্গেই ওই নৌকায় থাকা মাছুম আহমেদের বরাত দিয়ে তাদের বড় ভাই মাসুদ আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মারুফকে বাঁচানোর জন্য অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। সমুদ্রের স্রোতে সে তলিয়ে যায়।
মাছুম ও বেলালের মতো অন্তত ১৬ জনকে তিউনিসিয়ার জেলেরা সাগর থেকে উদ্ধার করে বলে তিউনিসিয়া রেড ক্রিসেন্টের কর্মকর্তা মোংগি স্লিম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “উদ্ধার হওয়ারা বলেছেন, রাত থেকে ভোর পর্যন্ত অন্তত আট ঘণ্টা তারা সাগরের ঠাণ্ডা জলে ভাসছিলেন। জেলেরা তাদের দেখে উদ্ধার করে।”
বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া ১৬ জনের মধ্যে ১৪ জন বাংলাদেশি।
উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিরা এখন তিউনিসিয়ার জারজিস শহরে হাসপাতালে রয়েছেন।